ঢাকা মহানগরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্মিত ভবনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, রাজউক এলাকায় নির্মাণাধীন ৩,৩৮২টি ভবনে নকশার গড়মিল চিহ্নিত করা হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে আংশিকভাবে ভেঙে ফেলা হবে।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম-বাংলাদেশ আয়োজিত “সমস্যার নগরী ঢাকা: সমাধান কোন পথে?” শীর্ষক নগর সংলাপে এসব কথা বলেন রাজউক চেয়ারম্যান।
তিনি জানান, এ ধরনের ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রথম ধাপে সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ফৌজদারি মামলা, নকশা বাতিল এবং প্রয়োজনে ভবন সিলগালা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবনের যেসব অংশ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, সেসব অংশ ভেঙে ফেলা হবে বলেও তিনি জানান।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নিয়মের মধ্যে না আসা পর্যন্ত এসব নির্মাণাধীন ভবনকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এ সময় নগর পরিকল্পনায় একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “ঢাকাকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হলে একটি নির্দিষ্ট ছাতার নিচে আনা জরুরি। নগরের পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের সেবার বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে যেসব ভবন ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়ে গেছে, সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনই নতুন কোনো প্লট বরাদ্দের পরিকল্পনা নেই। বরং বেদখল হওয়া জমিগুলো উদ্ধার করে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী ও পরিবেশবিদরা। তারা ঢাকার বর্তমান সমস্যাবলী যেমন দূষণ, যানজট, খাল দখল, এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ তুলে ধরেন এবং সমাধানে সুশাসন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের জিডিপির বড় একটি অংশ আসে ঢাকা থেকে, অথচ এই শহরটি ঘনবসতি, দখল, এবং অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত। বক্তারা ব্যাংকক শহরের মতো উদাহরণ টেনে ঢাকাতেও কমিউনিটি-ভিত্তিক আবাসন প্রকল্প চালুর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ‘ঢাকাই’ ম্যাগাজিন ও ঢাকার খাল নিয়ে একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
Post a Comment