ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বার্নলির কাছে হেরে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে ওঠার আশা শেষ হয়ে গেছে শেফিল্ড ইউনাইটেডের। তবে ফলাফল ছাড়াও ম্যাচটির আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে একটি বিতর্কিত মুহূর্ত—শেফিল্ড ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর মেজাজ হারানোর ঘটনা।
২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২-১ গোলে জয় তুলে নেয় বার্নলি। এতে করে লিডস ইউনাইটেডের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ২০২৫-২৬ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে নিশ্চিত হয় বার্নলির অংশগ্রহণ। কিন্তু ম্যাচ শেষে ঘটে এমন এক ঘটনা, যা ছাপিয়ে গেছে মাঠের পারফরম্যান্সকেও।
ম্যাচ শেষ হতেই বার্নলির সমর্থকরা জয় উদযাপনে মেতে ওঠেন। মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছুটা শিথিল থাকায়, অনেক ভক্ত মাঠের আশপাশে চলে আসেন। এ সময়, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান ও ডেইলি মিরর জানিয়েছে, একাধিক বার্নলি ভক্ত অতিরিক্ত উদ্দীপনায় শেফিল্ড ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের খুব কাছাকাছি চলে যান, এমনকি একজন ভক্ত নাকি উদযাপনের সময় হামজার শরীরের ওপর পড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।
হামজা চৌধুরী এমন অপ্রত্যাশিত আচরণে হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন । তিনি বার্নলি সমর্থকদের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন এবং তাকে শান্ত করতে নিরাপত্তাকর্মীরা ছুটে আসেন, তবে হামজার রাগ এতটাই বেশি ছিল যে, তাকে প্রায় জোরপূর্বকই মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যেতে হয়েছে।
ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া হলেও সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। তার মাতৃ-পারিবারিক শেকড় বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে। লেস্টার সিটির হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। বর্তমানে ধারে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলছেন এই মিডফিল্ডার।
বাংলাদেশি ভক্তদের কাছেও তার প্রতি আলাদা আবেগ রয়েছে। তাই এই ঘটনাটি বাংলাদেশের ফুটবল মহলেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই ঘটনার পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে ইংলিশ ফুটবলের ম্যাচ-পরবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে। প্রিমিয়ার লিগে ওঠা-নামার মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দর্শকদের আচরণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়া বড় ক্লাবগুলোর জন্য ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হতে পারে। এই ধরনের ঘটনা খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়, বিশেষ করে যখন ম্যাচের আবেগ চরমে পৌঁছায়।
মাঠে হেরে যাওয়ার হতাশার সাথে বার্নলি সমর্থকদের অতি উত্তেজনাকর আচরণে মেজাজ হারানো হামজা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়াকে একপেশেভাবে দেখা কঠিন। খেলোয়াড়রা যেমন আবেগের মানুষ, তেমনি তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও সর্বোচ্চ গুরুত্বের দাবিদার। ভবিষ্যতে যেন এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে ফুটবল বিশ্ব।
Post a Comment